ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৭৩৭

প্রস্তাবিত বাজেটে  পরিবর্তন আসছে 

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১০:৫০ ২৭ জুন ২০১৯  

বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ, দেশের ব্যবসায়ী ও শেয়ারবাজারের কথা চিন্তা করে এসব পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

বাজেট পাসের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবর্তনের কারণ সম্পর্কে জাতীয় সংসদে বিস্তারিত বলতে পারেন। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

 জানা গেছে, পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব বিষয় সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছে সেগুলোতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার।

আগের কয়েকটি অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেট পাসের আগে আলোচিত, সমালোচিত বিষয়ে পরিবর্তন আনবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর কর্মকর্তারা আশা করছেন, এসব পরিবর্তনে মধ্যবিত্ত ও ব্যবসায়ীরা খুশি হবে।

সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত উৎসে কর প্রত্যাহার হচ্ছে :

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে সমালোচিত বিষয় হলো, মধ্যবিত্তের ভরসাস্থল সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত উৎসে কর ধার্য। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বর্ধিত এই কর আরোপের প্রস্তাব পাস হলে সমাজের মধ্যবিত্ত, অবসরভোগী ও ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের আয়ের ওপর সরাসরি আঘাত আসবে। এটি নিয়ে সংসদেও সমালোচনা হয়েছে। তাই সরকার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর বর্ধিত উৎসে কর প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে।

 পুঁজিবাজারের রিটেইন আর্নিংস ও রিজার্ভ কর প্রত্যাহার :

প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজার বিকাশে একগুচ্ছ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছে তালিকাভুক্ত কম্পানির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে রিটেইন আর্নিংস ও রিজার্ভ ৫০ শতাংশের বেশি হলে ১৫ শতাংশ কর ধার্য করার বিষয়টি।


প্রস্তাবিত বাজেটে স্টক ডিভিডেন্ডের পরিবর্তে ক্যাশ বা নগদ ডিভিডেন্ড প্রদানকে উৎসাহিত করতে কোনো কম্পানি স্টক ডিভিডেন্ড প্রদান করলে এ লভ্যাংশের ওপর ১৫ শতাংশ করারোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এটিও শেষ মুহূর্তে পরিবর্তন হতে পারে।

মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে অগ্রিম কর উঠে যাচ্ছে  :

নতুন ভ্যাট আইনে এবার অগ্রিম ব্যবসায় ভ্যাটের (এটিভি) পরিবর্তে ৫ শতাংশ আগাম কর (এটি) বসানো হয়েছে। অর্থাৎ মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ঢালাওভাবে ৫ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হবে।


ফলে আমদানিপর্যায়ে এসব যন্ত্রপাতি ও পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়বে ভোক্তার ওপর। বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে বাজেট পাসের সময় তা পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সিমেন্ট ও রডে অগ্রিম আয়কর তুলে দেওয়া হচ্ছে :

প্রস্তাবিত বাজেটে সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানিপর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। পাশাপাশি অগ্রিম আয়কর (এটি) ধরা হয়েছে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ। এর ফলে এখন এ খাতে মোট ২০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে।

কাঁচামালে আগাম কর আরোপ এবং অগ্রিম আয়করের প্রভাবে টনপ্রতি রডের দাম বাড়বে প্রায় ১১ হাজার টাকা। সিমেন্ট ও রডের দাম বাড়ার সরাসরি প্রভাব পড়বে সরকারের উন্নয়নমূলক মেগা প্রকল্পে ও আবাসন খাতে।

মধ্যবিত্তদেরও গৃহনির্মাণ খরচ বাড়বে। এ দুটির নেতিবাচক প্রভাব এবং ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত অগ্রিম আয়কর বা এটি তুলে দেওয়া হচ্ছে।

বিদ্যুৎ সংযোগে টিআইএন :

বিদ্যুতের নতুন সংযোগ নিতে এবং পুরনো গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল দিতে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে ২০১৯-২০ সালের বাজেটে।


টিআইএন বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন স্বয়ং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গত সোমবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার কথা বলেছেন।

আর এই গ্রাহকের বেশির ভাগই দরিদ্র, দিনমজুর। এদের পক্ষে টিআইএন করা কষ্টদায়ক ও অমানবিক বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগে টিআইএন বাধ্যতামূলকের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার।

প্রত্যাহার হতে পারে ই-কমার্সের ভ্যাট :

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবসা) ও ভার্চুয়াল বিজনেস বা অনলাইনে পণ্য বেচাকেনাসহ বেশ কিছু খাতে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এ ভ্যাট হার কমানো হতে পারে।